সম্পর্ক তত্ব এবং পরকিয়া

"যে সম্পর্কে কোনো মায়া নেই, সেটা আসলে প্রকৃত সম্পর্ক না"

আমরা বেশিরভাগ মানুষই আবেগী, অভিমানী।

আমরা কেউ কেউ সম্পর্কের ব্যাপারে হিংসুটে। অন্যের ভালো সম্পর্ক দেখে নিজেরা নিজেদের মধ্যে শেষ হয়ে যাই।

ভার্চুয়াল সম্পর্কগুলো বেশ কম্প্লিকেটেড হয়। না পারে ঝগড়া করতে, না পারে একটু ছোয়া পেতে, না পারে একটু আবেগ থামাইতে। রাগ/অভিমান ভাঙতে হলেও ফোন দিতে হয়। ফোন বন্ধ করলে আর কোনো সুযোগ পাওয়া যায় না। আমাদের জীবনটা ভারতীয় আর্ট ফিল্মের মতো না। এখানে প্রতিদিন জল তুলতে হয়, প্রতিদিন ব্যবহার করতে হয়।

চরিত্র মানুষের বড় সম্পদ। চরিত্রহীনেরাই সম্পর্কের বুলি আওড়ায়। তাই এই সকল চরিত্রহীনদের নিকট থেকে ১০০ ফুট দূরত্বে অবস্থান করবেন। পারলে ১০০ কি.মি দূরে থাকবেন। শুধু সুন্দর আর মায়াবী চেহারায় নিজেকে ভাসিয়ে দেবেন না। এই সুন্দরের মধ্যেও দুর্গন্ধ এবং বিষাক্ত বর্জ্য লুকিয়ে থাকে। যা সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ না করলে আপনি বুঝতে পারবেন না। তবে সম্পর্কের আগে কিছুটা আঁচ করতে পারবেন। অনৈতিক কোনো সম্পর্ক আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী সুখ দিতে পারবে না। আপনার বিবেকবান মানুষ হলে নীতি বহির্ভূত কোনো সম্পর্কে আপনি জড়াতে ভয় পাবেন। আপনাকে এই ধরণের সম্পর্ক কখনই গ্রাস করতে পারবে না। সুতরাং নিজেকে যাচাই করারও এটি একটি পন্থা। আপনি যদি কখনও দেখেন যে; আপনার মন সাই দিচ্ছে অনৈতিক কোনো সম্পর্কে; তাহলে ভাববেন আপনার বিবেক আপনার থেকে ছুটি নিয়েছে।

পরকিয়া এখন সমাজ নষ্টের জন্য মাহমারী ক্যান্সার হিসাবে দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগ সম্পর্কগুলো এখন পরকিয়ায় লিপ্ত হচ্ছে। স্বামী বা স্ত্রীকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর ভালো লাগছে না। যারা পরকিয়ায় আসক্ত, তারা আসলে সময়ে সময়ে নতুন মানুষ পরিবর্তন করে। নতুন নতুন স্বাদ-গন্ধ খোঁজে। তারা পারফিউম ব্র্যান্ড বদলানোর মতো করে মানুষ বদলায়। ভালবাসা বদলায়। সত্যিই নষ্টদের অধিকারে সমাজ চলে গেছে। একজন স্ত্রীলোক ইউরোপিয়ান/আমেরিকান ভিসা পাবার লোভে স্বামীকে ছেড়ে আরেকজনের হাত ধরে চলে যাচ্ছে। একজন স্বামী তার স্ত্রীকে ফেলে অর্থ কিংবা অন্য কোনো মোহে পড়ে ছেড়ে চলে যাচ্ছে অনায়াসে। কেউ কেউ তো বাচ্চা ফেলেও চলে যাচ্ছে। লোভের কারণে দুটো সংসারই কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

একজন মানুষ আপনার জীবনে থাকা অবস্থায়, অন্য একটি মানুষকে কখনই আশ্বাস দিতে পারেন না। তাকে কাছে নিতে পারেন না। তাকে ভালবাসার অধিকার সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা ধর্ম কিন্তু আপনাকে দেয় না। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই নীতি বহির্ভূত সম্পর্কে জড়াবেন না। নিজের বিবেকের আদালতে আপনি পিষ্ট হবেন। প্রকৃতির প্রতিশোধ ভয়াবহ। আজ হয়তো ভাববেন আপনি জিতে গেছেন, কিন্তু একটা সময় আসবে, তখন প্রকৃতি আপনাকে যে শাস্তি দিবে, তা কোনো মানুষও দিতে পারে না। সুতরাং সম্পর্ক হতে হবে ১০০% খাটি ও নির্ভেজাল।

সব নৈতিক সম্পর্ক আমৃত্যু টিকে থাকুক।