ডিভোর্স হওয়ার পরে করণীয়
১. ডিভোর্স হবার পরে প্রথম যে করণীয়; তা হলো নিজের সিদ্ধান্তের উপর আস্থা তৈরী করা অথবা অন্যভাবে বললে বলা যায়, সৃষ্টিকর্তা আপনার জন্য যে পরিকল্পনা করে রেখেছেন, তার উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস করা।
২. নিজেকে সময় দেওয়া খুব জরুরী। দাম্পত্য জীবনে বেশ কিছু জটিলতা দেখার পরেই কিন্তু সাধারণত ডিভোর্স হয়। এজন্য এই জটিলতা কাটিয়ে উঠে নিজেকে ভালবাসা খুব জরুরী। ডিভোর্স হবার পর পরই নতুন বৈবাহিক জীবনে না যাওয়াই ভালো। অন্তত ১/২ বছর সময় নেওয়া ক্ষেত্রবিশেষে ভাল।
৩. ডিভোর্স হওয়ার পরে অনেকেই ডিপ্রেশনে চলে যান। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো, এক্স পার্টনার এর প্রতি অতিরিক্ত আবেগ অথবা নিজের জীবন নিয়ে আতংকিত হয়ে যাওয়া। যাদের নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস না থাকে এবং অতিরিক্ত আবেগী; তারাই ডিপ্রেশনে চলে যান অনেক দ্রুত। এই ডিপ্রেশন থেকে বের হতে গেলে পরিবারের সাথে মিশে থাকতে হবে। বন্ধুদের সাথে ভাল-মন্দ শেয়ার করতে হবে। কোনো কমিউনিটি বা গ্রুপেও সময় দিয়ে একটা কোয়ালিটি টাইম কাটাতে পারেন। অনেকই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। যাদের নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই বিন্দু পরিমাণে, তারাই এই বাজে জীবন বেছে নেন।
৪. ধর্মীয় জীবনবিধান এবং চর্চায় নিজেকে নিয়জিত করতে পারেন। এটা আপনার মনকে শুদ্ধ করতে এবং বাজে কাজ থেকে দূরে রাখবে।
৫. অনেকসময় আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব আপনাকে নিয়ে পরচর্চায় লিপ্ত হতে পারে। যাদেরকে আপনাকে নেগেটিভ মনে হয়, তাদেরকে ব্যক্তিগত এবং ভার্চুয়াল দুটো জায়গা থেকেই চিরতরে রিমুভ করে দেন। এরা আপনার জীবনে কোনোদিন কাজে আসবে না।
৬. ডিভোর্স হবার পরেই কাছের মানুষজন আপনাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে-পড়ে লাগেন। তাদেরকে প্রথমেই আপনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিন। আপনি যদি সময় চান, তাহলে তাদেরকে বলে দিন যে আপাতত বিয়ে সংক্রান্ত কোনো কথা আপনার সাথে শেয়ার না করার জন্য। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে মানসিকভাবে তৈরী হওয়ার জন্য কাজ করুন।
৭. আপনার প্রাক্তনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অকারণে স্ট্যাটাস, পরচর্চা কিংবা কোনো তীর্যক মন্তব্য করবেন না। এতে আপনার ব্যক্তিত্বের হানি ঘটতে পারে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি পাবলিক বক্তব্য দেওয়া লাগতে পারে। এটা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। অনেক সময় আইনী প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে বা আইনী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষন করতে বা কোর্টে প্রমাণ করতে স্ট্যাটাস দেওয়া লাগতেও পারে। তবে এই ধরণের বিষয়গুলিতে কৌশলী হতে হবে। এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আপনার লেখা/আচরণ আপনার প্রতিকূলে যায়।
৮. লাইফ পার্টনার তৈরী করতে কোনো আবেগকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। কারণ, ডিভোর্সীদের জীবন নিয়ে এমনিতেই প্রশ্নবিদ্ধ। আবার নতুন করে ভুল সিদ্ধান্ত আপনার জীবনকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে দিতে পারে। এজন্য পরিবারকে সাথে নিয়ে কিংবা অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নতুন জীবন শুরু করা উচিত। আপনার যদি সন্তান থাকে, তাদেরকে প্রথম প্রাইওরিটি দিয়ে নতুন জীবনকে স্বাগত জানাতে পারেন। তবে অবশ্যই সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী আগাবেন। জীভন নিয়ে তামাশা করবেন না। সর্বোপরি নিজেকে ভালবাসতে শিখুন।
লেখা: হাদিউজ্জামান পলক